কোটালীপাড়া প্রতিনিধিঃ
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামিম দাড়িয়াসহ ১৮ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো উপজেলা সদরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে মোতায়ের করা হয়েছে পুলিশ।
জানাগেছে, বুধবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে কোটালীপাড়া শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ সরকারি কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় মঞ্চে ওঠা নিয়ে ছাত্রলীগ নেতা ইমন নিজামী ও শাহাবুদ্দিন দাড়িয়ার মাঝে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে এই দুই নেতার সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
এ সময় ইমন নিজামী, শাহাবুদ্দিন দাড়িয়াসহ ৫জন আহত হয়। গুরুতর আহত ইমন নিজামীকে কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হলে তার শারিরীক অবস্থার অবনতি ঘটে। এখানের চিকিৎসকদের পরামর্শে ইমন নিজামীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সে বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এ ঘটনায় ইমন নিজামীর ভাই আলী হাসান রিফাত বৃহস্পতিবার (০১ ফেব্রুয়ারী) বাদী হয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামিম দাড়িয়াসহ ছাত্রলীগের ১৮নেতা-কর্মীকে আসামী করে কোটালীপাড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এ দিকে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামিম দাড়িয়ার বহিস্কারের দাবিতে আন্দোলনে নামে ছাত্রলীগের একাংশ। তারা গত ৩দিন ধরে তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। আন্দোলনকারীরা শামিম দাড়িয়ার বহিস্কারের জন্য ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে। বর্তমানে উপজেলা সদরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে উপজেলা সদর ও এর আশপাশের এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি চৌধুরী সেলিম আহম্মেদ ছোটন বলেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামিম দাড়িয়ার নির্দেশে ছাত্রলীগ নেতা নেতা ইমন নিজামীকে মারপিট করা হয়েছে। সে এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। এই ন্যাক্কার জনক কাজের জন্য আমরা শামিম দাড়িয়ার বহিস্কার দাবি করছি।
তিনি আরো বলেন, আমরা বৃহস্পতিবার দুপুরে আমাদের বিক্ষোভ মিছিল থেকে শামিম দাড়িয়ার বহিস্কারের জন্য ৪৮ ঘন্টার সময় বেঁধে দিয়েছিলাম। এই ৪৮ঘন্টা আগামী কাল শনিবার দুপুরে শেষ হবে। আমরা এই সময়ের মধ্যে শামিম দাড়িয়ার বহিস্কার দাবি করছি। যদি তাকে বহিস্কার করা না হয় তাহলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।
এ বিষয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামিম দাড়িয়ার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমি দুই পক্ষের সংঘর্ষ নিরসনের চেষ্টা করেছি। আমি কাউকে মারপিট করার নির্দেশ দেইনি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে।
এদিকে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ৩দিন অতিবাহিত হলেও এদের বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি উপজেলা আওয়ামী লীগ। দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হলে আবারো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে বলে জানিয়েছেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক বেশ কয়েকজন ছাত্রনেতা।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে এ সকল সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা বলেন, ছাত্রলীগের বিবাদমান দুই গ্রুপের বিরোধ এখন প্রকাশ্য রুপ নিয়েছে। এক গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছে উপজেলা ছাত্রলীগ । অন্য গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছে পৌর ছাত্রলীগ। আগামী উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গ্রুপিং আরো জোরালো হতে পারে। তাই এই বিরোধ নিষ্পত্তিতে এখনই পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ভবেন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, আমরা দ্রুতই ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের বিরোধপূর্ণ বিষয়টি রাজনৈতিক এবং সামাজিক ভাবে মিটিয়ে ফেলবো।
কোটালীপাড়া থানার ওসি মুহাম্মদ ফিরোজ আলম বলেন, বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত ও স্বাভাবিক রয়েছে। উপজেলা সদর ও এর আশপাশের এলাকায় এখনো পুলিশ মোতায়েন আছে।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply