কালের খবরঃ
ডুপ্লিকেট রসিদ বই ব্যবহার করে করোনা পরীক্ষার ২ কোটি ৬১ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় গোপালগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ কে ওএসডি করা হয়েছে। তাকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মহাখালীতে সংযুক্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. আলমগীর কবীর স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানাগেছে।
প্রজ্ঞাপনে সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ কে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মহাখালীতে ওএসডির আদেশ দেওয়া হয়। এছাড়া তাকে আগামী ৫ কর্মদিবসের মধ্যে বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদানের নির্দেশনা দেওয়া হয়। অন্যথায় ৬ষ্ঠ কর্মদিবসে বর্তমান কর্মস্থল থেকে তাৎক্ষণিক অব্যাহতি বা স্ট্যান্ড রিলিজ মর্মে গণ্য হবেন বলে উল্রেখ করা হয়েছে। এদিকে গোপালগঞ্জের নতুন সিভিল সার্জন হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. জিল্লুর রহমান।
গত ২৭ জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশন ( দুদক) গোপালগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ ও খুলনার সাবেক সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ সহ ৬ জনের বিরুদ্ধে করোনা পরীক্ষার ফির ২ কোটি ৬১ লাখ ৪৪ হাজার ৪০০ টাকা আত্মসাতের মামলায় আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করে ।
অভিযোগপত্রে বলা হয় , ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুলাই পর্যন্ত ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ ও ডা. সুজাত আহমেদ পৃথক মেয়াদে খুলনার সিভিল সার্জনের দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় খুলনা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে বিদেশগামী যাত্রী ও সাধারণ কোভিড-১৯ রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ল্যাবে প্রেরণ করা হতো। তবে ল্যাবে যে পরিমাণ নমুনা পাঠানো হতো তার থেকে রোগীর সংখ্যা কম দেখিয়ে টেস্টের ফির টাকা আত্মসাৎ করা হয়। ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুলাই পর্যন্ত মোট ফি আদায় করা হয়েছিল ৪ কোটি ২৯ লাখ ৯১ হাজার ১০০ টাকা। তবে সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছিল ১ কোটি ৬৮ লাখ ৪৬ হাজার ৭০০ টাকা। বাকি ২ কোটি ৬১ লাখ ৪৪ হাজার ৪০০ টাকা আত্মসাৎ করা হয়।
২০২২ সালে ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ খুলনা থেকে বদলী হয়ে গোপালগঞ্জের সিভিল সার্জন হিসেবে যোগদেন। আর ডা. সুজাত আহমেদ চাকরি থেকে অবসরে গেছেন ।
টাকা আত্মসাতের ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক খন্দকার কামরুজ্জামান বাদী হয়ে ২০২১ সালের ১৮ নভেম্বর খুলনা থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার তদন্ত শেষে চলতি বছরের ২৭ জুলাই তিনি গোপালগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ ও খুলনার সাবেক সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
আসামিরা হলেন-২৫০ শয্যা বিশিষ্ট খুলনা জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) প্রকাশ কুমার দাস, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) মো. রওশন আলী, ক্যাশিয়ার তপতী সরকার, আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. এস এম মুরাদ হোসেন, তৎকালীন সময়ে দায়িত্ব পালন করা খুলনার সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ ও সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ।
চার্জশিটে বলা হয়েছে, পরস্পর যোগসাজশে সরকারি রশিদ বইয়ের বাইরে ডুপ্লিকেট রসিদ বই ব্যবহার করে তারা ওই টাকা আত্মসাৎ করেন।
এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন নিয়াজ মোহম্মদ বলেন, আমি টাকা আত্মসাত ঘটনায় খুলনা দুদকে অভিযোগ করি এবং থানায় জিডি করি। এই কারনে ল্যাব টেকনিশিয়ান প্রকাশ কুমার দাস ক্ষিপ্ত হয়ে অফিস ম্যানেজ করে আমাকে ফাসিয়েছে। তিনি আরো বলেন, অভিযোগ দায়ের করলাম আমি আর আমাকেই আসামী করা হলো। এটা মেনে নেয়ার নয়। তারপরও সরকারের সিধান্ত মোতাবেক আমি ঢাকায় যোগদান করবো এবং আইনী লড়াই চালিয়ে যাব।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply