কালের খবরঃ
গোপালগঞ্জের মধুমতি বিলরুট ক্যানেলের (নদী) সাথে কংশুর খাল সংযোগ কাজের উদ্বোধন করেছেন জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা। দীর্ঘ ৫৫ বছর পর এই খাল নদীর সঙ্গে সংযোগ হলো। এতে এলাকার হাজার হাজার কৃষকের চাষাবাদে সুবিধা হবে। রবিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে টেকেরহাট-গোপালগঞ্জ জাতীয় মহাসড়কের কংশুর নামক স্থানে এ খনন কাজের উদ্বোধন করা হয়।
দীর্ঘ ৫৫ বছর পূর্বে পাকিস্তান আমলে এই খালের মুখ বন্ধ করে সড়ক নির্মাণ করা হয়েছিলো। এতে অন্তত ২০ হাজার একর জমি শুষ্ক মৌসুমে সেচের আওতায় আসবে। ফলে এ অঞ্চলের অন্তত ২০ গ্রামের ৩০ হাজার কৃষি পরিবার উপকৃত হবে। স্থায়ী জলবদ্ধতার হাত এই খালের বন্ধ মুখ খুলে দেয়ার জন্য বেশ কয়েকবার এলাকাবাসী মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহন করেন । পরে জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে গোপালগঞ্জ সড়ক বিভাগ এই খালের বন্ধ মুখ খুলে দেয়ার জন্য উদ্যোগ গ্রহন করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গোপালগঞ্জ পৌরসভার মেয়র শেখ রকিব হোসেন, সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাহিদ হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নাজমুন্নাহার, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহসিন উদ্দিন, সড়কের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী কুমারেশ বিশ্বাস, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মামুন খান, সড়কের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আনোয়ার, স্থানীয় করপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি নোয়াব আলী ফকির, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ মোল্লা, ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি খায়রুল মোল্লাসহ স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেনীপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় কৃষক ইদ্রিস আলী, ইলতুত মিস, এস এম নজরুল ইসলামসহবেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, কংশুর খালের বন্ধমুখ খুলে দিয়ে নদীর সাথে সংযোগ করে দেয়ায় এ অঞ্চলের হাজার হাজার কৃষক উপকৃত হবে। শুষ্ক মৌসুমে তারা জমিতে সেচ দিতে পারবে। কৃষি উৎপাদনে খরচ কমবে। এতে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে।
স্থানীয় করপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি নোয়াব আলী ফকির বলেন, নদীর সাথে কংশুর খালের সংযোগ স্থাপনের ফলে করপাড়া, দূর্গাপুর, কংশুর, খাটিয়াগড়, কাটরবাড়ি, মালিবাতা, কাজুলিয়া, উলপুরসহ আশপাশের অন্তত ২০ গ্রামের কৃষকেরা উপকৃত হবে। তারা খালে পানি দিয়ে সেচ দেয়ার পাশাপাশি পরিবারের দৈনন্দিন কাজ সারতে পারবেন।
গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ড. অরবিন্দ কুমার রায় বলেন, দীর্ঘদিন এই খালটির সাথে নদীর সংযোগ বন্ধ থাকায় এই অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ চাষাবাদে সমস্যার মধ্যে ছিলো। শুষ্ক মৌসুমে তাদের গভীর নলকুপ বসিয়ে সেচ দিতে হতো। এতে কৃষকদের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছিলো। এবং স্থায়ী জলবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছিলো। বন্ধ মুখ খুলে দেয়ায় হাজার হাজার কৃষক সরাসরি উপকৃত হবেন।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, নদীর সাথে কংশুর খালের সংযোগ স্থাপনের দীর্ঘদিনের দাবী ছিল এলাকাবাসীর। কয়েকটি স্থানে স্থায়ী জলাবদ্ধতার কারনে যুগ যুগ ধরে চাষাবাদ করতে পারছিলেন না কৃষক। সড়ক বিভাগের মাধ্যমে এই খালের বন্ধ মুখ খুলে দেয়ায় কৃষকসহ অনেক মানুষ উপকৃত হবেন।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply