কালের খবরঃ
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করতে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন,যারা চাইনি আওয়ামী লীগ কোন দিন ক্ষমতায় আসুক।এদেশের মানুষ আবার পেট ভরে ভাত খাক। মানুষের মাথা গোঁজার ঠাঁই হোক। রোগে চিকিৎসা পাক,শিক্ষা পাক, তাদের প্রতি আমাদের চ্যালেঞ্জ। এই দেশ আমার বাবা স্বাধীন করেছেন। আমার বাবা যে লক্ষ্য নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছেন, সেটা আমি করবোই। শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন করা,অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা এটাইতো আমাদের লক্ষ্য। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিলো পদ্মা সেতু। মিথ্যা অপবাদ দিতে চেয়েছিলো। নিজের ভাগ্য তো গড়তে আসিনি। নিশ্চিয় বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে এসেছি। তারপরও যে অপবাদ দিয়েছে, তার প্রতিবাদ করে নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু করতে পেরেছি। এটাই হলো সবচেয়ে বড় কথা। সেই শক্তিটা কিন্তু আপনারা যুগিয়েছেন। কোটালীপাড়াবাসী আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আজকে আপনারাই আমার সব দায়িত্ব নিয়েছেন। আমার নির্বাচন আমার সব কিছুই আপনারা দেখেন। আমার টুঙ্গিপাড়া কোটালীপাড়ার মানুষ গুলোই তো আমার সবচেয়ে বড় শক্তি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আজকে সারা বিশ্বে উজ্জ্বল করতে পেরেছি। যারা বাংলাদেশের কোন ভালই চোখে দেখে না । চোখ থাকতে যারা অন্ধ তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলার নাই। তারা দেখে না,কিন্তু ভোগ করে। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি, আজকে সবার হাতে মোবাইল ফোন, অনলাইন। সবাই সারা দিন কথা বলে। এতোগুলো টেলিভিশন দিয়ে দিয়েছি। সারাদিন কথাবার্তা বলে তারপর যদি বলে কিছুই বলতে পারি না, কথা বলার অধিকার নাই। সব বলেই বলে কথা বলার অধিকার নাই। এদের ব্যাপারে করুণা করা ছাড়া আর কিছুই নাই। আমরা তাদের করুণাই করি।
শেখ হাসনা বলেন, আমাদের ফসল আমাদেরই ফলাতে হবে। আমাদের খাদ্য চাহিদা আমরা পূরণ করবো। আর যা উদ্বৃত্ত থাকে তা বরং অন্যদের দিতে পারবো। সেটাই আমরা করবো। খাদ্য সংরক্ষণের আমরা ব্যবস্থা করছি। আমরা প্রত্যেক এলাকায় এলাকায় খাদ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিবো। যা যা সহযোগিতা করার আমরা করবো।
শেখ হাসিনা বলেন, আমার বাবা দেশটা স্বাধীন করে গেছেন। তাঁর স্বপ্ন পূরণ করে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়া আমার লক্ষ্য। আজকে হতদরিদ্র মাত্র ৫ ভাগ, সেটাও যেন না থাকে, তার জন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। একজনও হতদরিদ্র বলে কেউ থাকবে না। প্রত্যেকেরই একটি ঘর, জমি আর জীবন জীবিকার ব্যবস্থা ইনশাল্লাহ আমরা করতে পারবো।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, কমিউনিটি ক্লিণিক থেকে ওষুধ দিচ্ছি। শিক্ষার ব্যবস্থা করেছি। স্কুল গুলিকে আমরা নতুন ভাবে তৈরী করে দিচ্ছি। পড়াশোনার সুযোগ করে দিচ্ছি। বৃত্তি দিচ্ছি। প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে আমরা বৃত্তি দিবো। বয়স্কভাতা, বিধবাভাতা, প্রতিবন্ধি ভাতা,দুঃস্থ মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমের মাধ্যমে আমরা মানুষকে সহযোগিতা করে যাচ্ছি।
যারা আমাদের হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান সম্প্রদায় যার যার ধর্মীয়ভাবে আপনারা সৃষ্টির কর্তার কাছে কামনা করবেন এই বাংলাদেশ লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশের মানুষ সারা বিশ্বে মাথা উঁচু করে আমরা চলবো। বাংলাদেশের মানুষ মর্যাদা নিয়ে চলবে। সেটাই আমরা চাই।
নিজ নির্বাচনী এলাকার নেতা-কর্মীদের সাথে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় ও মতবিনিময় করতে গতকাল শনিবার (০১ ও ০২ জুন) দুই দিনের সফরে গোপালগঞ্জে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
এর আগে মতবিনিময় সভায় যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভার শুরুতে দলীয় প্রধানের নির্দেশে কোটালিপাড়ার ১২টি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ নেতা, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।
এসময় তারা আওয়ামী লীগ সভাপতিকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান। পদ্মা সেতু নির্মাণের পর গত এক বছরে তারা যে সুবিধা পেয়েছেন তা প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়ে স্বপ্নের এই সেতু নির্মাণে সাহসী ভূমিকার জন্য অভিনন্দন জানান।
কোটালিপাড়ার নেতারা বলেন, এলাকার জনগণ আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে নৌকায় ভোট দিতে মুখিয়ে আছে। নির্বাচন বিরোধী সব অপতৎপরত নস্যাৎ করতেও তারা প্রস্তুত বলেও জানান কোটালিপাড়াবাসী। এর আগে শনিবার (১জুলাই) সকাল সাড়ে এগারোটায় পদ্মাসেতু হয়ে কোটালিপাড়ায় পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর কোটালিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন করেন। এসময় ভবন প্রাঙ্গণে তিনটি গাছের চারা রোপণ করেন। এর মধ্যে একটি আম, একটি নিম ও একটি বকুল গাছের চারা।
এসময় তার ছেলে সজীব আহম্মেদ ওয়াজেদ, বাগেরহাট-২ আসনের এমপি শেখ হেলাল উদ্দিন এমপি, খুলনা-১ আসনের এমপি শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল,কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য কাজী আকরাম উদ্দিন আহম্মেদ,আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম এমপি, আওয়ামীলীগ নেতা এস এম কামাল হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন প্রতিনিধি শহীদ উল্লা খন্দকার,জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মাহাবুব আলী খান, সাধারণ সম্পাদক জিএস সাহাব উদ্দিন আজমসহজেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগনেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
রবিবার (০২ জুন) টুঙ্গিপাড়ায় স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সাথে মত বিনিময় করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঘরের মেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনকে কেন্দ্র করে নেতা-কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ উদ্দিপনা লখ্য করা গেছে। প্রধানমন্ত্রীর এ সফর নেতাকর্মীদের মাঝে ঈদের আনন্দকে বাড়িয়ে দিয়েছে বলে মত প্রকাশ করেন নেতৃবৃন্দ।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply