কালের খবরঃ
গোপালগঞ্জসহ তিনটি জেলায় বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) এর উদ্ভাবিত ব্রি হাইব্রিড ধানের রেকর্ড পরিমান ফলন হয়েছে। ব্রি হাইব্রিড ধান-৫ প্রতি হেক্টরে ৯.৫ মেট্রিক টন (১৪%আদ্রতায়)ও ব্রি হাইব্রিড ধান-৩ হেক্টর প্রতি ১০ মেট্রিক টন (১৪%আদ্রতায়)ফলেছে। এ ধান দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের ইঙ্গিত দিচ্ছ বলে সংশ্লিটরা জানিয়েছেন।
সম্প্রতি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার দীঘলিয়া গ্রামের কৃষক স্বপন হালদারের জমিতে উৎপাদিত এই দু’ জাতের ধান কেটে পরিমাপ করেছে। গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এ তথ্য জানিয়েছে। দেশে প্রচলিত হাইব্রিড ধান হেক্টর প্রতি ৭ থেকে ৮ টন ফলন দেয় বলে জানায় গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি ।
অফিস সূত্র আরো জানিয়েছে, চলতি বোরো মৌসুমে ব্রি’র অধিক ফলনশীল হাইব্রিড ধানের জাত উদ্ভাবন, গবেষণা ও আধুনিকায়ন প্রকল্লের আওতায় গোপালগঞ্জ, নড়াইল ও বাগেরহাট জেলার ১১২ একর জমিতে কৃষক ৩শ’ ৩৯টি প্রদর্শনী প্লটে এই দু’জাতের হাইব্রিড ধানের আবাদ করে। প্রত্যাশার চেয়েও অনেক বেশি ফলন পেয়েছেন তারা।
কোটালীপাড়া উপজেলার দীঘলিয়া গ্রামের কৃষক মুজিবুর রহমান বলেন, ব্রি থেকে বীজ,সার, পরামর্শ ও নগদ অর্থ পেয়ে আমার ১ একর ১৫ শতাংশ জমিতে ব্রি হাইব্রিড ধান-৩ ও ব্রি হাইব্রিড ধান-৫ জাতের আবাদ করি। এ ধানে সার কম লেগেছে এবং রোগ ও পোকার আক্রমন হয়নি। তাই কম খরচে বেশি ধান উৎপাদন করে আমি লাভবান হয়েছি। আমার ক্ষেতে ধানের সর্বোচ্চ ফলন দেখে প্রতিবেশিরা আগামীতে এ ধান চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
কোটালীপাড়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা নিটুল রায় বলেন, ধান গবেষণার এ দু’ জাতের হাইব্রিড ধান মাঠ ট্রায়েলে সর্বোচ্চ ফলন দিয়েছে। এ জাত ছড়িয়ে দিতে পারলে দেশে ধান উৎপাদনে বিপ্লব ঘটবে।
ব্রি আঞ্চলিক কার্যালয় গোপালগঞ্জের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোঃ রুহুল কুদ্দুস বলেন, এ জাতের ধান চিকন। বাজারে একটু বেশি দামে বিক্রি হবে। ধানের ভাল ফলন দেখে ৩ জেলার কৃষক আগামী বছর এ ধান আবাদে আগ্রহী হয়েছেন। বীজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বিএডিসি এ ধানের বীজ উৎপাদন শুরু করলে কৃষকের বীজের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে।
ব্রি, আঞ্চলিক কার্যালয়, গোপালগঞ্জ এর প্রধান ড. মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, প্রচলিত হাইব্রিড ধান হেক্টরে ৭ থেকে ৮ টন ফলন দেয়। সেখানে আমাদের উদ্ভাবিত হাইব্রিড রেকর্ড পরিমান ফলন দিয়েছে। এছাড়া বিদেশী হাইব্রীড ধানের বীজ বাজারে ৩ শ’ থেকে সাড়ে তিনশ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।এ ব্যাপারে ব্রি হাইব্রিড ধানের বাণিজ্যিকভাবে বীজ উৎপাদনের জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সেখানে ব্রি হাইব্রীড ধানের বীজ প্রতি কেজি কৃষক ১শ’ টাকা থেকে দেড়শ টাকায় কিনতে পারবেন। এতে বিপুল পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হয়। ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি করে খাদ্য নিরাপত্তা ও এসডিজি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।#
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply