রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:২৪ পূর্বাহ্ন

চাঁদাবাজির অভিযোগে কাশিয়ানীতে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে থানায় মামলা

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০২৫, ৩.৩১ পিএম
  • ২০০ Time View

কাশিয়ানী প্রতিনিধিঃ

চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলা বিএনপির এক নেতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।মামলার ভয় দেখিয়ে এক নারীর কাছে আড়াই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করায় ভুক্তভোগী নারী কাশিয়ানী উপজেলা বিএনপির সহ-যুববিষয়ক সম্পাদক নিয়ামুল হোসেন মিলনের বিরুদ্ধে এই মামলঅ করেন।

চাঁদা দাবি করা সংক্রান্ত পাঁচ মিনিটের একটি মোবাইল কলরেকর্ড ইতিমধ্যে ভাইরাল হওয়ায় ইতো মধ্যে বিষয়টি আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অভিযুক্ত বিএনপি নেতা কাশিয়ানী উপজেলা মহেশপুর ইউনিয়নের বাথানডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা।

ভুক্তভোগী নারী ও স্থানীয়রা জানায়,গেল বছরের ১৭ ডিসেম্বর কাশিয়ানী উপজেলার মহেশপুর ইউনিয়নের বাথানডাঙ্গা-রামপুর গ্রামের মৃত জাকির মিয়ার ছেলে ইজিবাইকচালক মাহাবুর মিয়ার বাসার সামনে থেকে একটি প্রাইভেটকার উদ্ধার করা হয়। ওই বিএনপি নেতা নিজে পুলিশের সঙ্গে থেকে প্রাইভেটকারটি মাহাবুর মিয়ার বাসার সামনে থেকে উদ্ধার করে। পরে প্রাইভেটকারের মালিক খুঁজে না পাওয়ায় পুলিশ নিয়মানুযায়ী আইনানুগ প্রক্রিয়া শেষে প্রাইভেটকারটি জব্দ দেখিয়ে আদালতে পাঠায়। তবে কারো বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি। উদ্ধারের পর জানা যায় প্রাইভেটকারটি মাহাবুর মিয়ার কাছে নিয়ে এসেছিল তার এক বন্ধু। এ ঘটনার পর থেকে ভয়ে পলাতক রয়েছে ইজিবাইক চালক মাহাবুর মিয়া।

ফাঁস হওয়া কলরেকর্ডে ওই বিএনপি নেতাকে বলতে শোনা যায়, দারোগার কাছে আমি আপনার ছেলেসহ দুজনের কথা বলেছি। আড়াই লাখ টাকা লাগবে। বিষয়টি ওসি-এসপি স্যারের নাকি নজরে গেছে। তারা অ্যাকশনে যাইতে বলছে।এই তিনজনকে আড়াই লাখ টাকা দিতে হবে। তা ছাড়া হবে না। আজকে সকাল ১০ টার ভিতর না দিলে তোমার ছেলের নামেও মামলা হয়ে যাবে।

এসময় অপর প্রান্ত থেকে ইজিবাইকচালক মাহাবুর মিয়ার মা শিল্পী বেগমকে বলতে শোনা যাচ্ছে, কাকা আমার ছেলে তো নির্দোষ। আমি আড়াই লাখ টাকা কোহানে (কোথায়) পাবো। আমার ভিটাবাড়ি বেচলেও লাখ টাকা হবে না। তুমি আমার ছেলের একার বিষয়টি দেখো। আমি একলাখ টাকা দিতে পারবো।এসময় ওই বিএনপি নেতা বলেন, মোবাইল এতোকথা না বলে আপনি আমার বাড়ি আসেন।

এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) চাঁদাবাজীর অভিযোগ এনে কাশিয়ানী উপজেলা বিএনপির সহ-যুববিষয়ক সম্পাদক নিয়ামুল হোসেন মিলনের বিরুদ্ধে কাশিয়ানী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগি নারী শিল্পী বেগম।

মাহাবুর মিয়ার চাচা সৈয়দ মিয়া বলেন, নিয়ামুল হোসেন মিলন রাজনীতি করে আমরা জানি। প্রাইভেটকার উদ্ধারের সময় তিনি পুলিশের সঙ্গে ছিলেন। উদ্ধারের পর থেকে নিয়ামুল হোসেন মিলন মাহাবুবের মাকে মামলা হবে বলে বিভিন্ন ভয় দেখিয়ে আসছেন।

বিষয়টি স্বীকার করে বিএনপি নেতা নিয়ামুল হোসেন মিলন  সাংবাদিকদের বলেন, প্রতিদিন ওই মহিলা আমার বাড়ি এসে কান্দে। আমি কী করবো। পরে মানবিক কারণে তাদের জন্য সুপারিশ করতে গেছি। আমাকে দারোগা গৌতম বাবু বলেছে ওরা তো ওই সময় বলছিল তিন চার লাখ টাকা যা লাগুক তাই দিবে মামলা যেন না হয়। সেইটা দিতে বলেন মামলা তাদের নামে হবে না। আমাকে কাশিয়ানী থানার দারোগা গৌতম বাবু যা বলছে আমি তাই তাদের কাছে বলছি। আমি নিজের কথা বলিনি।

এ বিষয়ে জানতে কোটালীপাড়ার থানার সাব-ইন্সপেক্টর (সাবেক কাশিয়ানী থানা) গৌতম কুমার সেন বলেন, মিলন সাহেবকে আমি চিনি। তবে তার সঙ্গে মামলা সংক্রান্ত বিষয় বা টাকার কোনো বিষয় নিয়ে আমার কথা হয়নি। সে হয়তো নিজে ফেঁসে গিয়ে আমার ওপর দোষ চাপাচ্ছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কাশিয়ানী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শফিউদ্দিন বলেন, গত বৃহস্পতিবার শিল্পী বেগম বাদী হয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় আসামী করা হয়েছে একজনকে। আমাদের আইনানুগ প্রক্রিয়া চলমান। দ্রুতই আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হবো।

এ ঘটনায় নিয়ামুল হেসেন মিলনের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শেখ মো. সেলিম বলেন, মামলা যেহেতু হয়েছে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। এবং সাংগঠনিকভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে গোপালগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Advertise

Ads

Address

Office : Sheikh Fazlul Haque Moni Stadium (2nd floor), Gopalganj-8100 Mobile: 01712235167, Email: kalerkhabor24.com@gmail.com
© All rights reserved 2022

Design & Developed By: JM IT SOLUTION