কোটালীপাড়া প্রতিনিধিঃ
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় পারকোনা গণেশ পাগল সেবাশ্রমের ৩শত বছরের পূরনো বট গাছটি ভেঙ্গে পড়েছে। এ খবর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে সেবাশ্রমের শত শত ভক্তবৃন্দ গাছটিকে শেষ বারের মতো দেখার জন্য আশ্রমে এসে ভিড় করেন।
সোমবার (১১ জুলাই) সন্ধ্যায় প্রায় ১একর জায়গা জুড়ে বিরাট আকৃতির এই বটগাছটি বিকট শব্দে হঠাৎ ভেঙ্গে পড়ে। এ সময় বটগাছের নিচে থাকা সেবাশ্রমের আটচালাটি (টিনেরছাউনি) ভেঙ্গে দুমড়ে মুচড়ে যায়। তবে আটচালার নিচে কোন ভক্ত বা সেবাইত না থাকায় কেউ হতাহত হয়নি।
পরের দিন মঙ্গলবার (১২ জুলাই) সকাল থেকে সেবাশ্রমের লোকজন ৩শত বছরের পূরনো এই বটগাছটি অপসারণের কাজ শুরু করেছেন। প্রায় অর্ধশত শ্রমিক গাছটি অপসারণে জন্য কাজ করছেন। এভাবে অপসারণে কাজ করলে সম্পূর্ণ গাছটি সরাতে ১০ থেকে ১৫দিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন গণেশ পাগল সেবাশ্রম মন্দির কমিটির সভাপতি মাইকেল হিরোহিত বিশ্বাস।
তিনি বলেন, মহামানব গণেশ পাগল তাঁর জীবদ্দশায় পারকোনার এই বটগাছের নিচে বসে সাধনা করতেন। তাঁর দেহ ত্যাগের পরে এখানে তাঁর নামে আশ্রম গড়ে ওঠে। স্বাধীনতার পর থেকে আমরা এখানে প্রতি বছর ২১শে পৌষ এই বট গাছের নিচে বাৎসরিক মহোৎসব পালন করে থাকি।
হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ কোটালীপাড়া উপজেলা শাখার সভাপতি সুভাষ চন্দ্র বালা বলেন, মহামানব শ্রী শ্রী গণেশ পাগল ১২৫৫ বঙ্গাব্দে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার পোলসাইর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। সেখান থেকে তিনি ঊনশিয়ার ভট্টের বাগানে এসে সিদ্ধিলাভ করেন। এরপর তিনি পারকোনার এই বটগাছের নিচে এসে ঈশ্বরের সাধনা ও মানবসেবায় জীবনের অনেকটা সময় কাটিয়েছেন।
বটগাছটি ভেঙ্গে পড়ার খবর শুনে দেখতে আসা উপজেলার তারাকান্দর গ্রামের গৃহ বধু অঞ্জনা রায় বলেন, ৮ বছর ধরে আমি এখানে মহোৎসবে আসি। এই বটগাছটিকে ঘিরে অত্র এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। তাই শেষ বারের মতো এই বটগাছটি দেখতে এলাম।
উপজেলা ফরেস্ট অফিসার এফ আলম বলেন, গাছটি কাটার পরে গোড়ার রিং দেখে এর আনুমানিক একটি বয়স নির্ধারন করা যায়। তবে প্রাথমিক ভাবে গাছটি দেখে ২শত বছরের অধিক বয়স মনে হচ্ছে। গাছের বয়স অধিক হলে প্রতিবছরই এর কান্ডের অবক্ষয় ঘটে। এ কারণে গাছটি ভেঙ্গে পড়তে পারে। #
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply