কালের খবরঃ
ইতালিতে পাড়ি জমাতে গিয়ে ভূমধ্যসাগরে ট্রলার ডুবে নিহত ৮ জনের মধ্যে তিন জনের বাড়িই গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে।তাদের বাড়ীতে চলছে শোকের মাতম। সংসারের হাল ধরতে গিয়ে দালালদের মাধ্যমে অবৈধ পথে ইতালি যেতে গিয়ে করুণ পরিনতি ভোগ করতে হলো তাদের। এখন পরিবারের আশা সন্তানদের মরদেহ যেন বাড়ীতে আসে, এক নজর যেন দেখতে পারেন।
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার গয়লাকান্দি গ্রামের পক্ষঘাতগ্রস্ত বাবা পান্নু শেখ অপেক্ষায় রয়েছেন ছেলে ইমরুল কায়েস আপনকে ফিরে পাওয়ার আশায়।তিনি এখনো জানেন না, ছেলে বেঁচে আছে না মারা গেছে। তার একটাই চাওয়া তিনি যেন তার ছেলেকে ফিরে পান।একমাত্র ছেলের জন্য হা-হুতাশ করছেন তিনি। মা কামরুন নাহার ছেলের মৃত্যুর খবর পেলেও জানাননি পক্ষাঘাতগ্রস্ত অসুস্থ স্বামীকে।শুধু ইমরুল কায়েস আপন নয় এমন করুন পরিনতির শিকার হয়েছেন একই উপজেলার বড়দিয়া গ্রামের দাদন শেখের ছেলে রিফাত শেখ ও ফতেপট্টি গ্রামের কাশেম শেখের ছেলে রাসেল শেখ।
বাবা পান্নু শেখ ২০০৪ সালে সৌদি চলে যান। ১৫ বছর পর ২০১৯ সালে বাংলাদেশে ফিরে এসে একটি কোম্পানিতে ড্রাইভারের চাকরি করতেন। এক বছর আগে তিনি পক্ষাঘাতগ্রস্থ হয়ে কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেললে বন্ধ হয়ে যায় আয় রোজগার। তাই সংসারের হাল ধরতে এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ইমরুল কায়েস আপন ইটালি যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে। পরে আত্মীয় রহিমকে ১১ লাখ টাকায় গত ১০ জানুয়ারি ইতালির উদ্দেশ্যে পাঠান ছেলে আপনকে। পরে গত ১৪ ফেব্রুয়ারী লিবিয়া থেকে ট্রলারযোগে ইতালির উদ্দেশ্যে রওনা দেন আপন। পরে ভূমধ্যসাগরে ট্রলার ডুবে ছেলের মৃত্যুর খরর বাড়ীতে আসলে নেমে আসে শোকের ছায়া। শুধু আপন নয় একই চিত্র রিফাত শেখ ও রাসেল শেখের বাড়ীতে।
তিন যুবকের মুত্যুতে শুধু পরিবার নয় গ্রামে জুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। নিহতদের বাড়ীতে ভীড় করেছেন গ্রামবাসী। এমন ঘটনা যেন আর না ঘটে সেজন্য দালালদের দৌরাত্ম কমাতে আইনী পদক্ষেপ নেয়ার দাবী স্থানীয়দের।আর যাতে কোন মা-বাবা তার সন্তানকে না হারায় সেজন্য দালালদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির দাবী স্থানীয়দের।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply