
কালের খবরঃ ভর্তি জটিলতার কারনে গোপালগঞ্জের শেখ হাসিনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৫৮ শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। শনিবার (৪জুন) এসব শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নিতে বিদ্যালয়ে গেলে তাদের পরীক্ষায় বসতে দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনীর শিক্ষার্থী সাইবা হাসান বলেন, অনুপ কুমার বিশ^াস স্যারকে বললাম স্যার আমার সিট কোথায় ? স্যার আমাকে বলেন দেখাবানি। এর পর স্যার আমাকে বলেন তোমার সিট নাই তাই তোমাকে পরীক্ষা দেয়া হবে না। এর আগে আমি ছয়মাস স্কুলে ক্লাস করেছি। এখন পর্যন্ত আমার নাম রেজিষ্টারে উঠেনি। এ ঘটনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে। শনিবার সকালে শেখ হাসিনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় চত্ত্বরে এ ঘটনায় ঘটে।

এসময় অধ্যক্ষ শাহানাজ রেজা এ্যানির সাথে বাক বিতন্ডায় জড়িয়ে পরেন ছাত্রী অভিভাবকরা। এ খবর পেয়ে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোহসিন উদ্দিন বিদ্যালয়ে এসে অভিভাবকদের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের আশ^াস দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
বিদ্যালয় সূত্রে জানাগেছে, লটারীতে ভর্তির পর অপেক্ষামান থাকা ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ১৩ শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়ে সদ্য বদলি হওয়া অধ্যক্ষ হুমায়ারা খানম ভর্তি করেন। এসব শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ক্লাশ কওে আসছিলেন। কিন্তু সাবেক অধ্যক্ষ বদলির পর বিষয়টি জানাজানি হয়। হঠাৎ করে তাদের ভর্তি অবৈধ উল্যেখ করে স্কুলে আসতে ও অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষায় অংশ নিতে বারন করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। নিষেধ করার পরও শিক্ষার্থীরা শনিবার সকালে অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষায় অংশ নিতে স্কুলে আসলে তাদেরকে স্কুল কর্তৃপক্ষ বাঁধা দেন। ফলে তারা পরীক্ষায় অংশগ্রহন না করে বাড়ি ফেরেন। এসময় অনেক শিক্ষার্থী কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের অর্ধবার্ষিকীর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কিন্তু আমরা স্কুলে এসে আসন বিন্যাসে রোল নম্বর দেখতে পাইনি। এসময় স্কুল ভবনে যেতে গেলে শিক্ষক অনুপ কুমার বিশ্বাস স্যার আমাদের বাঁধা দেন। এতে আমরা পরীক্ষা দিতে পারিনি। এখন আমাদের লেখাপড়ার কি হবে।
অভিভাবক শরিফুল ইসলাম, এস এম হুমায়ুন কবিরসহ বেশ কয়েকজন বলেন, ব্যাংকে টাকা জমার বিনিময়ে আমার মেয়েদের স্কুলে ভর্তি করেছি । পাঁচ মাস তারা পাঠদান ও করেছে। হঠাৎ করে বলছে ওদের ভর্তি সঠিক নয়। এখন পরীক্ষায়ও অংশ নিতে পারছেনা। এতে ষষ্ঠ শ্রেনীর ১৩ শিক্ষার্থীরসহ ৫৮জন শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে সপ্তম শ্রেনীর ১৮ জন, অষ্টম শ্রেনীর ১৬ জন এবং নবম শ্রেনীর ১১ জন ছাত্রী রয়েছে। এর একটা সুষ্ঠ সমাধান হওয়া প্রয়োজন।
এ ঘটনায় গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোহসিন উদ্দিন বলেন, বিদ্যালয় তার আইন অনুযায়ী চলবে। এসব শিক্ষার্থীদের বিষয়ে আলাপ আলোচনা করে সমাধান করা হবে। নিয়ম বর্হিভূত কোন কাজ হয়ে থাকলে সে বিষয়েও তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত বুধবার (১ জুন) অর্ধ বার্ষিকী পরীক্ষার অংশগ্রহনের সুযোগের দাবীতে ও তাদের ছাত্রত্ব বজায় রাখার দাবীতে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION