শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ১২:২৭ পূর্বাহ্ন

ঘরপেয়ে এখন নিশ্চিন্তে ঘুম হয়

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২১ মার্চ, ২০২৩, ৬.১৯ পিএম
  • ২৯১ Time View

কালের খবরঃ

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ডুমুরিয়া ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া আশ্রয় কেন্দ্রে ঘর পেয়েছেন সত্তর উর্দ্ধ বয়সী শাহেদা বেগম। স্বামী গণি গাজী ছিলেন কৃষক। বিগত ২৫ বছর আগে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে ৪মেয়ে রেখে গেছেন। এর পর থেকে তিনি ভিক্ষা করে ও অন্যেরবাড়ি ঝিয়ের কাজ করে মেয়েদের বড় করে বিয়ে দিয়েছেন। থাকতেন ডুমুরিয়া ইউনিয়নের করফা গ্রামের ওয়াবদা বেড়িবাঁধের খুপড়ি ঘরে। এখন একা। দেখার কেউ নেই। পরন্ত বয়সে ভিক্ষাও ঠিকমতো করতে পারেননা। ঠিক এই সময় মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর পেলেন বৃদ্ধা শাহেদা বেগম। ঘরপেয়ে তিনি নিশ্চিন্তে বসবাস করছেন। এখন ভিক্ষাবৃত্তি করে যা পায় তাই দিয়ে তার জীবন কাটে।

শাহেদা বেগম বলেন, জীবনের শেষ বেলায় এসে একটু সুখের মুখ দেখছি। স্বামী মারা যাবার পর ৪মেয়ে নিয়ে উঠলাম ওয়াবদার বেড়িবাধে। সেখানে খুপড়ি ঘর করে থাকা শুরু হলো। ২৫ বছর সেখানে থেকে ৪মেয়েকে  বিয়ে দিয়েছি। তরা স্বামীর সংসারে গিয়ে আমাকে আর দেখেনা।  কারন আমি ভিক্ষা করে খাই। ঠিক এই সময় বঙ্গবন্ধুর মেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে ঘর ও জমি দিয়ে আশ্রয়স্থল করে দিয়েছেন।সেই ঘরে আমি থাকছি। পাঁচটি মুরগী পালছি। রাত হলে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারছি। এর থেকে আর বড় শান্তির কি আছে। যার দেয়ার কথা ছিল আমার স্বামীর ও বাবার।সেটা দিয়েছে আমার আরেক মা শেখ হাসিনা। আমি তার জন্য দুহাত তুলে দোয়া করি তিনি যেন দীর্ঘ জীবী হয়। গরীব দুঃখী মানুষের পাশে থাকতে পারে। আমার মাথায় যত চুল আছে সেই পরিমান আয়ু পায়।

একই আশ্রয়ণ কেন্দ্রের আব্দুল আউয়াল খান (৬৫) । তিনি বলেন,মাত্র সাত বছর বয়সে তাকে রেখে অন্যত্র চলে যান তার বাবা। মা বড়ু– বিবি অন্যের বাড়ি কাজ করে আমাকে বড় করেছে। আমার বয়স যখন ১৫ তখন মাকে নিয়ে পারি জমাই খুলনায়। রিক্সা চালিয়ে মাকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে থাকতা। এর মধ্যে আমার বিয়ে হয়। একটি মেয়ে। তাকেও বিয়ে দিয়েছি। জামাই সরকারি চাকরী করে। বিয়ের পর আমার খোঁজ খবর আর তেমন নেয়না। কিন্তু বিগত ১৪ বছর আগে আমার স্ত্রী রহিমা আক্তার স্ট্রোক করে ঘরে পড়ে আছে। তাকে রেখে কোথাও যাওয়া সম্ভবনা। তাই ভ্যানে বৌকে শুইয়ে রেখে মানুষের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করে সংসার চালাই। সেখানে মরার উপর খাড়ার ঘা ছিল ঘরভাড়া।   বাবার সম্পত্তি যা ছিল তা অন্যের কাছে বিক্রি করায় আমি ভূমিহীন হই। এই কারনে আমার কোন জমি ছিলনা। এই মুহুর্তে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর পেয়েছি। ঘরটা পেয়ে আমার যে কতবড় উপকার হয়েছে তা বলে বুঝাতে পারবোনা। ভাড়ার টাকা দিতে হচ্ছেনা। মাথা থেকে চিন্তা দূর হয়েছে। জন্মদাতা মাতা  পিতা আমাকে যা দিতে পারেনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে তাই দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আমাকে ঘর ও জমি না দিলে এই জীবনে আমার বাড়িঘর হতোনা। তাই আমি শেখ হাসিনার জন্য সব সময় দোয়া করি তিনি যেন সুস্থ শরীরে বেঁচে থাকেন।

কথা হয় আলী আকবরের সঙ্গে। তিনি বলেন আমরা স্বামী স্ত্রী ও শিশু পুত্রকে নিয়ে অন্যের জমিতে ঘর উঠিয়ে বসবাস করতাম। প্রধানমন্ত্রী আমাকে একটি ঘর দিয়েছে সাথে জমিও দিয়েছেন। আমার বাবার কোন জায়গা জমি নাই। তাই আমারও কোন জমি নাই। প্রধানমন্ত্রী যদি আমাকে ঘর ও জমি না দিতেন তাহলে  আমিও আমার সন্তানকে জমিবাড়ির মালিক করতে পারতাম না। প্রধানমন্ত্রী আমার মা বাবার অভাব পুরন করেছেন।

টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয়ন প্রকল্পে সরেজমিনে গেলে কথা হয় সুখী বেগম, সানজিদা বিশ্বাস, মিরাজ আলী শেখ, পুতুল বিশ্বাস, কনিকা চৌধুরী, নাজমা বেগম,ফিরোজা বেগম, নূর জাহান বেগমসহ বেশ কয়েকজন  সুবিধা ভোগীদের সঙ্গে। তারা জানান প্রধানমন্ত্রী আমাদের আশ্রয় দিয়েছেন। আশ্রয় পেয়ে আমরা খুবই উপকৃত হয়েছি। মা-বাবা, ভাই-বোন ও  ছেলে মেয়ে নিয়ে সুখে আছি। প্রধানমন্ত্রীকে আমরা সকলে দোয়া ও আর্শিবাদ করি। তিনি যেন ভালো থাকেন  সুখে থাকেন এবং আরো একশ বছর বাঁচেন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Advertise

Ads

Address

Office : Sheikh Fazlul Haque Moni Stadium (2nd floor), Gopalganj-8100 Mobile: 01712235167, Email: kalerkhabor24.com@gmail.com
© All rights reserved 2022

Design & Developed By: JM IT SOLUTION