মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:৫৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
গোপালগঞ্জে পারিবারিক কলহে গৃহবধু নিহত। সৎ ছেলেকে আটক আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে গোপালগঞ্জে র্যা লী ও মহড়া গোপালগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় কৃষক নিহত গোপালগঞ্জে গাড়ি চাপায় অজ্ঞাত নারী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু ৫ দফা দাবিতে গোপালগঞ্জে ইসলামী সমমনা দলগুলোর স্মারকলিপি প্রদান টুঙ্গিপাড়ায় বাসের ধাক্কায় স্কুলছাত্রীর মৃত্যু, সড়ক অবরোধ গোপালগঞ্জেও শুরু হয়েছে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন কর্মসূচী তারুণ্যের উৎসব উদযাপন উপলক্ষে গোপালগঞ্জে ফুটবল প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত সাংবাদিক মাহবুব হোসেন সারমাতের দাফন সম্পন্ন গোপালগঞ্জে এনটিভির স্টাফ রিপোর্টার মাহবুব হোসেন সারমাতের ইন্তেকাল

নারী চা শ্রমিকসহ কর্মজীবী নারীর প্রতি সহিংসতা ও বৈষম্য দূর করার আহবান

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪, ৪.১১ পিএম
  • ১৯৩ Time View

কালের খবরঃ

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে অনুষ্ঠিত হলো নারী চা শ্রমিক ও অন্যান্য কর্মজীবী নারীর প্রতি সহিংসতার অবসান হোক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও সংলাপ । আজ বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) শ্রীমঙ্গল উপজেলার ব্র্যাক লার্নিং সেন্টারে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এসময় ‘নারীর প্রতি সহিংসতা সমাধানে ১৬ দিনের প্রচারাভিযান’করা হয়। সোসাইটি ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট (সেড) ও ব্রাত্যজন রিসোর্স সেন্টার (বিআরসি) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ।  কর্মশালায় মূল আলোচ্য বিষয় ছিল ‘নারী চা শ্রমিক ও অন্যান্য কর্মজীবী নারীর প্রতি সহিংসতা ও বৈষম্য’।

চা শ্রমিকদের নিয়ে সেড-এর জরিপ ও অনুসন্ধান-ভিত্তিক সদ্য প্রকাশিত ১৫২ পৃষ্ঠার বই, টি ওয়াকার্র্স অব বাংলাদেশ, রিয়ালিটিজ অ্যান্ড চ্যালেঞ্জেস (বাংলাদেশের চা শ্রমিক, বাস্তবতা ও চ্যালেঞ্জ) গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এ প্রকাশনায় চা শ্রমিকদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা, কর্মপরিবেশ, চা বাগানে শ্রম আইনের প্রয়োগ ও অপপ্রয়োগ, মজুরি, স্বাস্থ্য, নারীর প্রতি সহিংসতা, সামাজিক সুরক্ষা ইত্যাদি বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য—উপাত্ত ও বিশ্লেষণ তুলে ধরা হয়েছে। বই-এ নারী চা শ্রমিকদের বিষয়ে বিশেষ নজর দেয়া হয়েছে।

চা বাগান নিয়ে সেড’র এই নতুন প্রকাশনা ও পূর্বের আরও প্রায় ডজনখানেক প্রকাশনার সাথে সবাইকে পরিচিত করে সেড’র পরিচালক ফিলিপ গাইন বলেন, “বিজ্ঞ অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান চা শিল্পের মালিকানায় শ্রমিদের অংশিদারিত্ব দেওয়ার পক্ষপাতী। এরকম স্মল হোল্ডিং-এর মডেল আছে শ্রীলঙ্কায়। এ ধরণের মডেল নিয়ে কী আমরা বাংলাদেশে কথা বলতে পারছি? তাহলে কীভাবে বৈষম্যের অবসান হবে!”

আলোচনা পর্বে নারীকন্ঠ হিসাবে যৌনকর্মীদের নিয়ে কর্মরত অধিকার কর্মী রাজিয়া সুলতানা যৌনকর্মীদের বর্তমান অবস্থা নিয়ে কথা বলেন, “পূর্বেও রাষ্ট্রের কাছে যৌনকর্মীরা তেমন কোন সাহায্য পায়নি। ছাত্র আন্দোলনের পরে এই কর্মীদের অবস্থা এখন আরও খারাপ হয়েছে। ভাসমান যেসব যৌনকর্মী আছে তারা এখন রাস্তায় কোথাও দাড়াতে পারে না, ছাত্র পরিচয়ের কেউ না কেউ তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। উপার্জন তো ওদের কিছু লাগবে। এই পরিচয়ের কথা শুনলে অন্য কোনও চাকুরিতেও নিতে চায় না কেউ। কোথায় যাবে এরা?” তাই আয়ের জন্য সুযোগ সৃস্টি করতে হবে।

“আমাদের মতো চা শ্রমিক, বিশেষ করে মাঠে কাজ করা এতো নারী চা শ্রমিকের কথা চিন্তা করে কী শ্রম আইনের সংশোধন হয়?” এমন প্রশ্ন করেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন (বিসিএসইউ)-এর জুড়ি ভ্যালীর সহ-সভাপতি শ্রীমতি বাউরি। তিনি বলেন“পাতাতোলার সেকশনে না আছে শৌচাগার, না আছে বিশুদ্ধ খাবার পানি। বাধ্য হয়ে আমাদের নোংরা পানি পান করতে হয়। এতোসব আইনের লংঘনের অবসান কবে হবে? আশা করি এই অন্তর্বর্তী সরকার এইদিকে নজর দিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।”

এছাড়া নারীকন্ঠ হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন বিসিএসইউ-এর সহ-সভাপতি জেসমিন আক্তার, তিনি বলেন,হিজড়া অধিকার কর্মী ইভান আহমেদ কথা, এবং শ্রীমঙ্গল ও মৌলভীবাজারের হরিজন নারী প্রতিনিধি সুকন বাশফোড় ও বাসন্তি বাশফোড়। তারা তাদের কর্মক্ষেত্রে হেনস্থা ও মজুরী বৈষ্যম্যের কথা তুলে ধরেন।

আলোচনা পর্বে বিসিএসইউ-এর ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল চা বাগানের নারী চা শ্রমিকের অশোভন কর্মপরিবেশের বাইরে ঘরের সহিংসতার বিষয়ে বলেন, “চা বাগানে সরকারের অনুমোদিত মদের দোকান বাগানের নারীদের সহিংসতার শিকারের অন্যতম কারণ। দিনশেষে কাজ থেকে ফিরে মদ্যপ স্বামীর হাতে অনেক নারী চা শ্রমিকই সহিংসতার শিকার হন। এই মদের দোকানের লাইসেন্স অতিসত্বর বন্ধ করা উচিত।”

মালিকপক্ষের নিজেদের দায় এড়ানোর প্রবণতার উপর আলোকপাত করে বিসিএসইউ-এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক রামভজন কৈরী বলেন, “যখনই কোথাও আমাদের অভিযোগ নিয়ে যাই, তার আগেই মালিকপক্ষের বার্তা ওখানে পৌছায় যায়। নিজেদের দায়ভার স্বীকার না করে এই ধরণের অপপ্রচার অবিলম্বে মালিকপক্ষের বন্ধ করতে হবে।”

শ্রমিকদের নিজেদের আরও সচেষ্ট হতে শ্রীমঙ্গল কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর-এর উপ—মহাপরিদর্শক মোহাম্মাদ মাহবুবুল হাসান বলেন, “শুধু দায় দিয়ে গেলে তো হবে না, আপনাদেরও কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। আইন লঙ্ঘনের দায়ে থানায় জিডি করতে পারেন, ইউনিয়ন এই ব্যাপারে সাহায্য করতে পারেন।” মালিকপক্ষের প্রতিনিধিত্বের ব্যাপারেও তিনি মন্তব্য করেন, “চা বাগানের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য সমস্যা নিরসনের পথ খুঁজতে হবে এবং এরকম পদক্ষেপে মালিকপক্ষের উপস্থিতি খুবই জরুরি।”

আলোচনা পর্বে সম্মানিত অতিথি এবং আলোচক হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. সুয়েব হোসেন চৌধুরী, গণমাধ্যম কর্মী ইদ্রিস আলী, সাবেক সিভিল সার্জন ডা. সত্যকাম চক্রবর্তী, বিসিএসইউ-এর সভাপতি মাখনলাল কর্মকার, এবং বিসিএসইউ-এর অর্থ সম্পাদক পরেশ কালিন্দি।

বক্তরা গবেষণার উপর সরকারি পর্যায় থেকে শুরু করে মাঠ পর্যায়ের সাংবাদিক পর্যন্ত সবার প্রচেষ্টা আরও বৃদ্ধির উপর জোর দেয়ার আহবান জানান।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Advertise

Ads

Address

Office : Sheikh Fazlul Haque Moni Stadium (2nd floor), Gopalganj-8100 Mobile: 01712235167, Email: kalerkhabor24.com@gmail.com
© All rights reserved 2022

Design & Developed By: JM IT SOLUTION