কালের খবরঃ
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে অরক্ষিত রেল ক্রসিং পারাপারের সময় ট্রেনে কাঁটা পড়ে নিহত পাঁচ নির্মাণ শ্রমিকের দাফন ও শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। একই এলাকার পাঁচজন মানুষ একই সঙ্গে মারা যাওয়ায় পারুলিয়া ইউনিয়ন জুড়ে শোকের ছায়ানেমে এসেছে। নিহতদের বাড়ীতে প্রতিবেশী ও আত্মীয় স্বজনরা এসে ভীড় করেছেন এবং শোকার্ত পরিবারকে শান্তনা দিচ্ছেন।শুক্রবার (২২ জুলাই)সকালে নিজ নিজ গ্রামের বাড়ীতে দাফন ও শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়।
কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মেহেদী হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কাশিয়ানী উপজেলার মহেশপুর ইউনিয়নের কাঠাম দরবস্ত গ্রামের কাগদী রেল ক্রসিংয়ে টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস ট্রেনের ধাক্কায় ও কাঁটা পড়ে পাঁচ শ্রমিক নিহত হন। পরে পুলিশ ও ফায়ার সির্ভিসের কর্মীরা হতাহতদের উদ্ধার করে। পরে রাত তিনটার দিকে ময়না তদন্ত ছাড়াই পরিবারের সদস্যদের কাছে নিহতদের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।
তিনি আরো জানান, শুক্রবার সকালে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী নিহতদের দাফন ও শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। এজন্য নিহতদের পরিবার প্রতি ১০ হাজার টাকা করে নগদ সহায়তা দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই)রাত ৯ টার দিকে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার শিরগ্রামে একটি নির্মাণাধীন স্কুল ভবনের ঢালাইয়ের কাজ শেষে কংক্রিট মিক্সার মেশিন সহ ১৪ জন শ্রমিক গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার পারুলিয়া গ্রামের নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন। এসময় তাদের বহনকারী ভটভটি গাড়ীটি কাঠাম দরবস্ত গ্রামের কাগদী রেল ক্রসিং পার হওয়ার সময় রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা গোপালগঞ্জগামী টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস ট্রেনটি তাদের ধাক্কা দেয়। এতে ভটভটিটি দূমড়ে মুচড়ে যায় এবং পাঁচ শ্রমিক ট্রেনে কাঁটা পড়ে ঘটনাস্থলে নিহত হন । এসময় অন্য নয় শ্রমিক আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ,ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে গিয়ে হতাহতদের উদ্ধার করে। গুরুতর আহত একজনকে প্রথমে কাশিয়ানী উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ও পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন, কাশিয়ানী উপজেলার পারুলিয়া ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের বিজয় মৃধার ছেলে সুজন মৃধা (৩৫), নিরোদ দাসের ছেলে পরিতোষ দাস (৩০), রবিন বিশ্বাসের ছেলে অমৃত বিশ্বাস (৩৫), মহের বিশ্বাসের ছেলে হিরামন বিশ্বাস (৪৫) ও পারুলিয়া গ্রামের মালেক সিকদারে ছেলে রাজ্জাক সিকদার (৪০)।
এ ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী কাঠাম দরবস্ত গ্রামের শামচুল হক খানের ছেলে হাসান খানসহ এলাকার বেশ কয়েকজন বলেছেন, এই ক্রসিংটা একটা জনবহুল এলাকার মধ্যে। এখান দিয়ে রাত দিন সব সময় মানুষ চলাচল করে।এখানে কোন গেট নাই। প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। আর গেট না থাকার কারণেই এই ৫ নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। আমরা গ্রামবাসী ট্রেন চলাচলের শুরু থেকে একটি গেট নির্মাণের দাবী করে আসছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষ আমাদের দাবীর কর্ণপাত করেননি। তাই দ্রুততম সময়ে এখানে একটি গেট নির্মাণের দাবী জানাচ্ছি।
প্রসঙ্গত, একই দিন বৃহস্পতিবার সকালে এই ট্রেনটি গোপালগঞ্জ থেকে রাজশাহী যাওয়ার সময় কাশিয়ানী উপজেলার কামারোল এলাকায় আবু তালেব মোল্লা (৬০) নামে এক বৃদ্ধ ট্রেনে কাঁটা পড়ে নিহত হন।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply