কালের খবরঃ

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় হাজার হাজার মানুষের শ্রদ্ধা আর ভালবাসায় পালিত হলো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৯ তম মৃত্যুবার্ষিকী।

আজ বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সকাল থেকেই গোপালগঞ্জ সহ আশপাশের জেলা থেকে আওয়ামী লীগ ও সহযোগি সংগঠনে নেতাকর্মিরা ও মুজিব প্রেমি মানুষরা খন্ড খন্ড শোক মিছিল নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে আসেন। পরে তারা বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

এদিন বেলা ১১ টায় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের পক্ষে গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান। পরে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আলী খান ও সাধারণ সম্পাদক জিএম সাহাব উদ্দিন আজমের নেতৃত্বে জেলা আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধ বেদিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান।

এরপর টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ, কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ, কাশিয়ানী উপজেলা আওয়ামী লীগ, মুকসুদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ, জেলা যুবলীগ, উপজেলা যুবলীগ, জেলা ছাত্রলীগ, উপজেলা ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, শ্রমিকলীগ সহ অন্যান্য সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মিরা বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান। এছাড়া গোপালগঞ্জের পার্শ্ববর্তী জেলা বাগেরহাট, নড়াইল ও পিরোজপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলার আওয়ামী লীগ সহ সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মি ও সাধারন মানুষ বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানান।এছাড়ার অফসংখ্য মুজিব প্রেমি মানুষ ব্যক্তিগত ভাবেও বঙ্গবন্ধুকে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

দীর্ঘ ১৫ বছর একাধারে রাষ্ট্রীয় ভাবে এই দিনটি পালন হয়ে আসছিল।এবছর দলীয় ভাবে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকীর বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়। এরআগে প্রতিটি মৃত্যুবার্ষিকী সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে পালিত হয়েছে নানা কর্মসূচি। এবছর কোন নিরাপত্তা বেষ্টনী না থাকায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে মানুষের ঢল নামে। বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধার জানাতে আসা নেতাকর্মি ও সাধারন মানুষ শ্লোগানের মাধ্যমে সাবেক প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবী জানিয়েছেন।

পরে বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধ কমপ্লেক্স মসজিদে সামনে উম্মুক্ত মঞ্চে জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়। শোকসভায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আলী খান, সাধারন সম্পাদক জিএম সাহাব উদ্দিন আজম, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল শেখ, পৌর আওয়ামী লীগের সাধরণ সম্পাদক শেখ সাইফুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন। সভা শেষে মিলাদ মাহফিলে অংশ নেন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মিরা।পরে তোবারক বিতরন করা হয়।

শোকসভায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক জিএম আজম বলেন, গত ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগের মন্ত্রী এমপি সহ যারা গণভবন ও ঢাকায় ছিলেন তাদেরকে সেনা ক্যাম্পে নেয়া হয়। আপনারা দেখেছেন সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে সদরঘাট থেকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। সেনাক্যাম্পের অফিসার্স ম্যাসে যাদেরকে নিরাপত্তা হেফাজতে রাখা হয়েছিলো তারা কোন পথে কিভাবে ওইখানে গেলেন।

তিনি আরো বলেন, সারা দেশে হত্যা আর নৈরাজ্য সৃষ্টি করা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমাদের অর্জিত স্বাধীনতা আজ ভূলুণ্ঠিত। তাই আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। এরজন্য সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে।

জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মাহাবুব আলী খান নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, জাতির পিতার শাহাদাৎ বার্ষিকীতে আমাদের ব্রত হবে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে যত দিন না পর্যন্ত দেশের মাটিতে ফিরিয়ে আনতে পারবো তত দিন আমরা আন্দোলন সংগ্রামে রাজ পথে থেকে লড়াই চালিয়ে যাব। শেখ হাসিনা দেশে না ফেরা পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরবো না।এরআগে, সকাল সাড়ে ৭ টায় জেলা আওয়ামী লীগ কার‌্যালয়ে দলীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।অন্যদিকে, বঙ্গবন্ধুর শাহাদা বার্ষিকী উপলক্ষে ব্যবসায়ী গোপালগঞ্জের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছেন দোকানীরা। একই সাথে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কালো পতাকা উড়িয়েছেন।