কালরে খবরঃ
সংগীতশিল্পী খালিদ সাইফুল্লাহকে গোপালগঞ্জ গেটপাড়া পৌর কবরস্থানে তাঁর বা-মায়ের কবরের পাশে সমাহিত করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ র্মাচ) বাদ যোহর দুপুর আড়াইটায় গোপালগঞ্জ শহরের গেটপাড়া কবরস্থানে তাঁর মরদেহ দাফন করা হয়।এর আগে বাদ যোহর বেলা ২ টায় গোপালগঞ্জ কোর্ট মসজিদের পাশে মরহুমের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এসএম মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তাঁর জানাজা সম্পন্ন হয়।
এতে গীতিকার- সুরকার প্রিন্স মাহমুদ, সহপাঠী,আত্মীয়স্বজন, ভক্তানুরাগী, শুভানুধ্যায়ী, গোপালগঞ্জের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন, স্থানীয় পাড়া প্রতিবেশী ও মসজিদের মুসল্লিরা অংশ নেন। জানাজায় হাজারো মানুষ অংশ নেন। পরে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় শহরের গেটপাড়া পৌর কবরস্থানে।
এর আগে ঢাকা থেকে সোমবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে খালিদ সাইফুল্লাহর লাশবাহী গাড়ি গোপালগঞ্জ এসে পৌঁছায়। এসময়ে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
গোপালগঞ্জ জেলা উদীচীর সভাপতি নাজমুল ইসলাম বলেন, খালিদ সাইফুল্লাহ মা-বাবার সাত সন্তানের মধ্যে সবার ছোট । তাঁর মা আনোয়ারা বেগম। বাবা বিএ হেমায়েত উদ্দিন। তারা কেউই বেঁচে নেই। বড় ভাই ড. মহিউদ্দিন ফারুক বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী এসোসিয়েশন ( বেলা) প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। তিনি ১৫ বছর আগে মারা যায় । এক পুত্র সন্তান অরিক মোল্লাকে নিয়ে স্ত্রী শামীমা জামান আমেরিকা বসবাস করেন। দুই বছর আগে খালিদ সাইফুল্লাহ আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে আসেন এবং ঢাকাতে বসবাস করতেন।
তিনি আরো বলেন, আমরা এক সাথে পড়ালেখা করতাম। খালিদ সাইফুল্লাহ ছাত্র জীবন থেকে গান গাইতো। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে তার ছিল সম্পৃক্ততা। একদিন খালিদের গান শোনার জন্য প্রধান শিক্ষকের কাছে আমরা ছুটির আবেদন করেছিলাম, কিন্তু সেদিন প্রধান শিক্ষক ছুটি দেননি। ছুটি শেষে আমরা সবাই মিলে তার গান শুনেছি। বাল্যবন্ধু খালিদ আজ চলে গেল। তার অভাব কোন ভাবেই পুরন হবার নয়।
গীতিকার, সুরকার ও সঙ্গীত শিল্পী পরিচালক প্রিন্স মাহমুদ বলেন, খালিদ ভাইয়ের সাথে আমার হবে স্মৃতি রয়েছে। খালিদ ভাইয়ের সাথে আমি ছোট বেলায় গোপালগঞ্জে এসেছি। আজও এসেছি খালিদ ভাইয়ের জন্য তবে ভাইকে চির বিদায় জানাতে। খালিদ ভাইয়ের শূন্যতা অন্যকারো দ্বারা পূরন হবে না। আমি শুধু তার আত্মার শান্তি কামনা করছি।
খালিদ সাইফুল্লাহ ১৯৬৩ সালে গোপালগঞ্জ জেলা শহরের চ্যেরঙ্গীর বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। গোপালগঞ্জে ছোটবেলা কেটেছে খালিদ সাইফুল্লাহর। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ার সময় থেকেই গানের প্রতি ভালোবাসা ছিলো তার। সরলতার প্রতিমা’, ‘যতটা মেঘ হলে বৃষ্টি নামে’, ‘কোনো কারণেই ফেরানো গেল না তাকে’, ‘যদি হিমালয় হয়ে দুঃখ আসে’ হয়নি যাবারও বেলা’, ‘নাথি খাতি বেলা গেল শুতি পারলাম না’ এর মতো অসংখ্য জনপ্রিয় গান তিনি শ্রোতাদের উপহার দেন।
১৯৭৯ সালে এসএসসি এবং ১৯৮১ সালে এইচএসসি পরীক্ষার পর ঢাকায় চলে যান। ভর্তি হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় । সেখান থেকে স্নাতক শেষ করে। গোপালগঞ্জে জন্ম নেওয়া এই শিল্পী ১৯৮১ সাল থেকে গানের জগতে যাত্রা করেন। ১৯৮৩ সাল থেকে ‘চাইম’ ব্যান্ডে যোগ দেন। একের পর এক হিট গান উপহার দিয়ে অল্প সময়েই খ্যাতি পান খালিদ, তাঁর গান এখনো মানুষের মুখে মুখে ফেরে।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply