কালের খবরঃ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) তাঁর নিজ নির্বাচনী এলাকা গোপালগঞ্জ-৩ আসনের টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়ায় দু’টি নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন।
এদিন সকাল ১১টায় টুঙ্গিপাড়া উপজেলার শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কলেজ এবং দুপুর ১টায় কোটালীপাড়া উপজেলার শেখ লুৎফর রহমান সরকারি কলেজ মাঠে প্রধানমন্ত্রী প্রধান অতিথির ভাষণ দিবেন। স্থানীয় উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত দু’টি জনসভাস্থলে প্যান্ডেল, নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরী সহ যাবতীয় প্রস্তুতিমূলক কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার জনসভাকে কেন্দ্র করে নেয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে স্থানীয় নেতা-কর্মি আর সাধারন ভোটার ও সমর্থকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা। প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকায় চলছে সাজ্বসাজ্বরব। পোস্টাল-ব্যানার আর ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে তাঁর নির্বাচনী এলাকা।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গোপালগঞ্জ-৩ আসন (টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়া) থেকে বিগত সময় ৭ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এ আসন থেকে বরাবরই শেখ হাসিনা নির্বাচনে অংশ নিয়ে থাকেন এবং বিপুল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হয়ে থাকেন। আওয়ামী লীগ অধ্যুষিত এই আসনে প্রায় শতভাগ ভোটারই আওয়ামী লীগের কর্মি সমর্থক।
দলের প্রধান হওয়ায় নিজ আসনে তিনি সাধারনত নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে আসতে পারেন না। তাইতো স্থানীয় নেতা-কর্মিরাই তাঁর নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা করে থাকেন। অবশ্য বিভিন্ন ঘরোয়া মিটিং বা সভায় তিনি তা সবার সামনে স্বীকার করেন আর তাই তাঁর আসনের নেতা-কর্মি আর ভোটারদের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাতে ভুল করেন না প্রধানমন্ত্রী।
এই আসনের নেতা-কর্মিরা ও ভোটাররাও শেখ হাসিনাকে ভোট দিয়ে নিজেদেরকে গর্বিত মনে করে থাকেন। কারণ তাদের ভোটে নির্বাচিত সংসদ সদস্য দেশের প্রধানমন্ত্রী হন। কিছু না চাইতেও যার কাছ থেকে সব কিছু পাওয়া যায়, তেমন নেতাকেই তো তারা ভোট দিয়ে জয়ী করে থাকেন। আগামী ৭ জানুয়ারীর ভোটেও শেখ হাসিনাকে বিজয়ী করে পঞ্চমবারের প্রধানমন্ত্রী দেখতে চান এলাকার ভোটাররা। প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে আনন্দ উদ্দীপনা বয়ে যাচ্ছে।
কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ বলেন, প্রধানমন্ত্রী আসছেন শুনে কোটালীপাড়ার মানুষ উৎফুল্ল। উৎসবমুখর পরিবেশ। আমরা প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচন পরিচালনা করছি। আমাদের নির্বাচন পরিচালনা পদ্ধতিই এবার ভিন্ন। আমরা রুট লেভেল থেকে শুরু করেছি। ইউনিয়ন কমিটি, ভোটার প্রতিনিধি কমিট, কেন্দ্রীয় কমিটি। এ সব কমিটি ভোটারদের কেন্দ্রে উপস্থিত করতে উদ্বুদ্ব করবে।
টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার মেয়র শেখ তোজাম্মেল হক টুটুল বলেন, মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন ঘরের মেয়েকে একবার দেখার জন্য। তাঁর কথা শুনার প্রহর গুনছেন হাজার হাজার মানুষ। প্রধানমন্ত্রী জনসভাস্থলে আসার আগেই মাঠ কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যাবে। টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মো. বাবুল শেখ বলেন, আমাদের সব প্রস্তুতি শেষ। এখন অপেক্ষারপালা। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনতে আগত মানুষে শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কলেজ মাঠ কানায় কানায়পূর্ণ হয়ে যাবে। মানুষ বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে আনন্দ উল্লাসের সাথে জনসভায় যোগদান করবেন।
প্রধান মন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকার উন্নয়ন প্রতিনিধি শহীদ উল্লা খন্দোকার বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে আমরা গত কয়েকদিন যাবত আমাদের উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দদের নিয়ে দফায় দফায় মিটিং করছি। যেভাবে আমরা প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছি তাতে জনসভাস্থল কানায় কানায় পরিপূর্ণ থাকবে। প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়ার মানুষকে যেভাবে ভালবাসে টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়াবাসীও তাকে তদ্রæপ ভালবাসে।
গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক জি.এম সাহাব উদ্দিন আজম বলেন, আগামী ৭ তারিখ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসবেন। তাঁর নিজ নির্বাচনী এলাকার ভোটারা তাকে আসলেও ভোট দিবেন না আসলেও ভোট দিবেন। বিষয়টি সেরকম । কারন গোপালগঞ্জের মানুষ নৌকার পক্ষে সব সময় রায় দিয়ে আসছেন। এটা আওয়ামীলীগের ঘাটি হিসেবে পরিচিত। বঙ্গবন্ধুর জন্মধন্য গোপালগঞ্জের মানুষ কখনও নৌকার বাহিরে নয়। তারপরও তিনি নির্বাচনের আগে আসছেন। এতে টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়াসজ গোপালগঞ্জের মানুষ এক উৎসবমুখর পরিবেশে গ্রামে গ্রামে, পাড়া মহল্লায় তারা ব্যক্তিগতভাবে মিটিং করে আমাদের প্রিয় নেত্রীর জনসভায় যোগদান করবেন। প্রিয় নেতৃ কি বলেন তা শুনার জন্য তারা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে গোপালগঞ্জ জেলা, টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহন করেছে। আমরা অত্যন্ত সুশৃংখলভাবে দুই জনসভায় যোগদান করবো।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল শুক্রবার বরিশালের জনসভা শেষ করে সড়ক পথে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় আসবেন এবং টুঙ্গিপাড়ায় নিজ বাসভবনে রাত্রিযাপন করেন।
জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার জন্য জেলা ও পুলিশ প্রশাসন সহ বিভিন্ন নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত বাহিনীর পক্ষ থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আশাকরি তাঁর গোপালগঞ্জের সফর শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ হবে।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply