কালের খবরঃ
গোপালগঞ্জের তিন উপজেলায় ১৫বিঘা জমিতে নতুন জাতের ধান, বিনাধান-২৫ এর চাষ করা হয়েছে। এবছরই জেলার ১২জন কৃষককে দিয়ে নতুন জাতের এই ধানের চাষ করানো হয়। পরীক্ষা মুলক চাষ করে ফলনও হয়েছে বেশ। প্রতিবিঘা জমিতে ৩২/৩৩মণ করে ফলন হয়েছে বলে চাষীদের সূত্রে জানাগেছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ পরমানু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) উদ্ভাবিত প্রিমিয়াম কোয়ালিটি বোরো ধানের জাত বিনাধান- ২৫ ধানের চাষ সম্প্রসারণ উপলক্ষে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে কৃষকদের নিয়ে উঠান বৈঠক করেছে।
মঙ্গলবার (২ মে) গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার কদমপুর গ্রামের কৃষক মোঃ বাচ্চু শেখের বাড়িতে এই উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পরমানু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) মহা-পরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম।
বিনা গোপালগঞ্জ উপকেন্দ্রের ইনচার্জ ও বিনার উর্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড.মোঃ কামরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উঠান বৈঠকে বিনা গোপালগঞ্জ উপকেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সৌরভ অধিকারী, বিনা গোপালগঞ্জ উপকেন্দ্রের ফার্ম ম্যানেজার আলমগীর কবির, কৃষক বাচ্চু মোল্লা সহ আরো অনেকে বক্তব্য রাখেন। এই উঠান বৈঠকে ৫০ জন কৃষক ও কৃষাণী অংশ নেন।
পরে কৃষক বাচ্চু মোল্লার ১০০ শতাংশ জমিতে চাষকৃত বিনাধান-২৫ পরিদর্শন করেন বাংলাদেশ পরমানু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) মহা-পরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম। এ সময় বিনার পদস্থ কর্মকর্তা, কৃষক ও কৃষাণীরা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলায় গোয়াল গ্রামের মৃদুল বালা, মৃদঙ্গ বালা, মুকসুদপুর উপজেলার উজানী গ্রামের শোভা তালুকদার, ধন্যরঞ্জন বিশ্বাস, কদমপুর গ্রামেরমোঃ মাসুদশেখ,লোহাইড় গ্রামের সালাউদ্দিন মিয়া,বেজড়া গ্রামের মোঃ পারভেজ ভূঁইয়া, ভাবরাশুড় গ্রামের ইলিয়াস মোল্লা, টুঙ্গিপাড়া উপজেলার শ্রীরামকান্দি গ্রামের মোঃ দুলাল শেখ ও চর বাশুড়িয়া গ্রামের মোঃ কাওসার শেখ এই ধানের প্রদর্শণী করেছে।
এর মধ্যে তিন জন কৃষক তাদের প্রদর্শণী খামার থেকে ধান কর্তন করেছেন। বিঘাপ্রতি যে পরিমান ধান উৎপাদন হয়েছে তাতে তারা খুশী। আগামীতে এই জাতের ধান চাষ করবেন বলে তারা জানিয়েছেন।মাঠে এই জাতের ধানের সমারোহ দেখে আগামীতে কৃষকরা এই জাতের ধান আবাদের আগ্রহ প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ পরমানু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) মহা-পরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম বলেন, দেশের চাহিদা অনুসারে সরু ও চিকন (প্রিমিয়াম কোয়ালিটি) চাল অপ্রতুল। বিদেশে রপ্তানির উদ্দেশ্যে আমাদের উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগ বিনা ধান-২৫ উদ্ভাবন করেছে। ২০২২ সালের ১৮ অক্টোবর বিনা ধান-২৫ জাতের ছাড় করা হয়। পাকিস্তান বা ভারতে এ ধরনের বাসমতি টাইপের জাত আছে। বিনা ধান-২৫ থেকে বিদেশে রপ্তানিযোগ্য সরু ও চিকন বাসমতি (প্রিমিয়াম কোয়ালিটি) চাউল পাওয়া যাবে। এই চাউল বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে ভূমিকা রাখবে। দেশে প্রিমিয়াম কোয়ালিটির চালের আমদানি নির্ভরতা কমাবে।
বিনার প্রধান আরো বলেন, আমাদের আসল উদ্দেশ্য কৃষিকে বাণিজ্যিকীকরণ করা, রপ্তানিমুখী করা। আমদানি নির্ভরতা কমানো। সেই জায়গায় বিনা ধান-২৫ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এই ধান আবাদ করলে কৃষক দ্বিগুণ লাভ করতে পারে। এই বিষয়টি নিয়ে আমরা উঠান বৈঠকে কৃষক ও কৃষাণীর সাথে কথা বলেছি। তারাও এই ধান চাষে আগ্রহ দেখিয়েছেন। আগামী বছর আমরা গোপালগঞ্জের দুই হাজার কৃষককে দিয়ে এই ধানের আবাদ সম্প্রসারণ করব। সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ শুরু করেছি।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply