কালের খবরঃ
দেশব্যাপী গ্রামীণ বাজার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় গোপালগঞ্জে নির্মিত হয়েছে পাঁচটি আধুনিক দোতলা মার্কেট। এগুলো হলো, সদর উপজেলার চন্দ্রদিঘলীয়া বাজার, কাশিয়ানীর রামদিয়া ও মাজড়া বাজার এবং মুকসুদপুরের উজানী ও খাঁদারপাড় বাজার।
প্রতিটি মার্কেটে রয়েছে কাঁচা বাজার, মুদি, মাছ-মাংসের দোকান, হার্ডওয়্যার, গার্মেন্টস, কসমেটিকস এবং মহিলা ব্যবসায়ীদের জন্য পৃথক দোকান। এছাড়াও, মার্কেটগুলোতে আছে শৌচাগার, ইউড্রেন ব্যবস্থা, প্রশস্ত অভ্যন্তরীণ সড়ক, সোলার সিস্টেম, অগ্নি-নির্বাপন ব্যবস্থা ও জলাশয়। প্রতিটি মার্কেটের জন্য সরকারের ব্যয় হয়েছে প্রায় তিন কোটি টাকা।
তবে নতুন মার্কেটগুলো চালু হতে কিছু বাধা এখনও রয়ে গেছে। চন্দ্রদিঘলীয়া মার্কেটে ২৬টি দোকানের জন্য ৮বার দরখাস্ত আহবান করা হয়েছে, কিন্তু মাত্র ৫টি আবেদন জমা পড়েছে। রামদিয়া মার্কেটে চাহিদা বেশি হলেও দোকান বরাদ্দ প্রক্রিয়া এখনো শুরু হয়নি। মাজড়া ও খাঁদারপাড় মার্কেটের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে এবং এ বছরের মধ্যে হস্তান্তর করা সম্ভব হবে।
গোপালগঞ্জ এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, চন্দ্রদিঘলীয়া মার্কেটটি গত ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩-এ সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার মহসিন উদ্দিন বুঝে নিয়েছেন। রামদিয়া মার্কেটটি কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা জান্নাত ৬ মার্চ ২০২৫-এ বুঝে নিয়েছেন। উজানী মার্কেট ২০ মার্চ ২০২৪-এ মুকসুদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম ইমাম রাজী টুলুর কাছে হস্তান্তরিত হয়েছে। মাজড়া ও খাঁদারপাড় মার্কেটের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে, এ বছরের মধ্যে হস্তান্তর করা হবে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, আমরা নতুন মার্কেটে ব্যবসা শুরু করতে আগ্রহী। তবে যত্রতত্র ছড়িয়ে থাকা অবৈধ দোকানপাট এবং খোলা বাজারের কারণে তারা এখনও দোকান নেননি। চন্দ্রদিঘলীয়া বাজারের ব্যবসায়ী অসীম বিশ্বাস বলেন, নতুন মার্কেটে মাছ বাজার বসবে শনি ও মঙ্গলবার, কিন্তু বাকি দিনগুলোতে বাজার শূন্য থাকে। এতে মার্কেটের বেচাকেনা বা কার্যকারিতা কমে যায়। রামদিয়া বাজারের ব্যবসায়ী হামিম সিকদার বলেন, সঠিক স্থান নির্বাচন এবং প্রশাসনিক সমন্বয় থাকলে মার্কেট দ্রুত পূর্ণরূপে চলতে পারত।তাতে সরকার রাজস্ব পেত।
ব্যবসায়ীরা আশা প্রকাশ করে আরো বলেন,নতুন মার্কেট চালু হলে রোদ-বৃষ্টি, ঝড়-ঝঞ্ঝার মধ্যে আর দোকানপাট চালাতে হবে না। মার্কেট ব্যবস্থাপনা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, নিরাপত্তা এবং শৌচাগার ব্যবস্থার কারণে তারা নিরাপদ ও সুশৃঙ্খলভাবে ব্যবসা করতে পারবে। ক্রেতা বিক্রেতা উভয়ের সুবিধা হবে।
প্রকল্প এলাকার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা আশ্বস্ত করে জানান, মার্কেট দ্রুত চালু করতে সকল পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে এব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম রকিবুল হাসান বলেন, “অবৈধ দোকানপাট সরিয়ে দিলে নতুন মার্কেটে ব্যবসায়ীরা আগ্রহী হয়ে আসবেন। কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী অফিসার পলাশ কুমার দেবনাথ জানিয়েছেন, “রামদিয়া মার্কেটে দোকান বরাদ্দ প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু হবে।
এলজিইডি গোপালগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী এহসানুল হক বলেন, বর্তমান হাটবাজারগুলোর উপর চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় কেনাবেচা সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে না। তাই আধাপাকা ভবনের পাশাপাশি বহুতল মার্কেট নির্মাণ অত্যন্ত জরুরি ছিল। তাই আমরা প্রকল্প গ্রহণকরি। প্রকল্পের কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে এবং প্রশাসন কার্যকর পদক্ষেপ নিলে ব্যবসায়ীরা সুফল পাবেন।
জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, সরকারি উদ্যোগে নির্মিত এই মার্কেটগুলো ব্যবসায়ীদের নিরাপদ পরিবেশ প্রদান করবে। রাজস্ব বৃদ্ধি করবে এবং স্থানীয় অর্থনীতি চাঙ্গা করতে সহায়তা করবে। প্রশাসনিক ও স্থানীয় সমস্যাগুলো সমাধান করে মার্কেট দ্রুত চালু করার ব্যবস্থা করা হবে।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION