কালের খবরঃ
গত ১৬ জুলাই এনসিপির পথসভা ও পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জে ঘটিত সহিংসতার বিষয়টি তদন্ত করতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অধীনে গঠিত একটি বিশেষ তদন্ত দল আজ গোপালগঞ্জ পরিদর্শন করেছেন। তদন্ত দলের প্রধান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি ড. মো. আবু তারিক।
এ সময় তদন্ত দলটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে, সেখানে উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য রেকর্ড করেছেন। তদন্ত দলের অন্য সদস্যদের মধ্যে ছিলেন জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব খন্দকার মোঃ মাহাবুবুর রহমান, আইন ও বিচার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোঃ সাইফুল ইসলাম, ২১ পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহীদুর রহমান ওসমানী, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের পরিচালক সরদার নুরুল আমিন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সাজ্জাদ সিদ্দিকী।
বিকেলে, তদন্ত দল গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার উলপুরে পুলিশের গাড়ীতে অগ্নিসংযোগের স্থান, জেলা কারাগার, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, এনসিপির পথসভাস্থলসহ সহিংসতার অন্যান্য ঘটনার স্থান পরিদর্শন করেন। এছাড়া, প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য সংগ্রহ করেন।
সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে তদন্ত দলের প্রধান সাবেক বিচারপতি ড. মো. আবু তারিক প্রেস ব্রিফিং করেন। ব্রিফিং এ তিনি বলেন, “আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য রেকর্ড করেছি। তদন্ত শেষে আমরা প্রতিবেদন সরকারের কাছে জমা দেব এবং সরকার সে প্রতিবেদন প্রকাশ করবে।”
এ সময়, জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব খন্দকার মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, “আমরা তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছি এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আমাদের কাজ চলমান, আগামীকালও আমরা এ বিষয়ে কাজ করব। সাংবাদিকরা আমাদের তথ্য দিতে চাইলে সহযোগিতা করতে পারেন।”এসময় গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান ও পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমানও উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য ১৬ জুলাই এনসিপির নেতৃবৃন্দ সারাদেশে পদযাত্রা ও পথসভা কর্মসূচির অংশ হিসেবে গোপালগঞ্জ আসেন। তাদের আসার আগেই স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ এবং ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পৌরপার্কে এনসিপির পথসভাস্থলে হামলা চালিয়ে মঞ্চের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে এবং চেয়ার ভাঙচুর করে। এরপর, এনসিপির নেতৃবৃন্দ পৌরপার্কে আসার পর, তাদের গাড়ী বহরের ওপর হামলা হয়। এতে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষ বাঁধে। মুহুর্তের মধ্যে পুরো গোপালগঞ্জ শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষে ৫ যুবক নিহত এবং অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হন, যার মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও সাংবাদিকরা রয়েছেন। এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫টি হত্যা মামলাসহ ১৬টি মামলা দায়ের হয়েছে।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION