কালের খবরঃ
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ ঘিরে দিনভর হামলাকারীদের সঙ্গে সেনা ও পুলিশ সদস্যদের সংঘর্ষে চারজন নিহত ও সাংবাদিকসহ অন্তত অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। এতে জেলাশহরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গত বুধবার রাত ৮টা থেকে আজ বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২২ ঘণ্টা কারফিউ জারি করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে দেখা গেছে, কারফিউ থাকলেও দিনমজুর, খেটে খাওয়া মানুষ রাস্তায় বেরিয়েছে। তবে এই ঘটনায় মামলা, অভিযান বা কেউ গ্রেপ্তার হয়েছেন কি না, তা পুলিশ নিশ্চিত করেনি। কারফিউ এর কারনে জেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা ও বৃহস্পতিবারের এইচ এস সি পরীক্ষা স্থগিত রাখা হয়েছে।
জেলা প্রশাসন থেকে মাইকিং করে জনগণকে বাইরে না আসার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে এরইমধ্যে। রাত থেকে জেলা সদরে লোকজনের চলাচল কমে গেছে। অতি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছে না।
গতকাল বুধবার প্রায় ৩ ঘণ্টার সংঘর্ষের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় গোপালগঞ্জ ছাড়েন এনসিপি নেতারা। এনসিপির সমাবেশের আগে ও পরে নিষদ্ধ ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ সমর্থীত নেতাকর্মীরা হামলায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয় গোপালগঞ্জের পৌর পার্ক এলাকা। বিকেল পৌনে সোয়া ২টার দিকে এনসিপির সমাবেশ শেষ হওয়ার পর পরই দ্বিতীয় দফা হামলা হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে হামলাকারীদের সংঘর্ষ চলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা।
সংঘর্ষের সূত্রপাত এনসিপি নেতাদের শহরে ঢোকার আগেই। নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ সদর উপজেলার উলপুরে পুলিশের গাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে। পরে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের গাড়িতেও হামলা চালায় তারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সমাবেশ স্থলে পৌঁছানোর আগেই দুপুর দেড়টার দিকে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ কর্মীরা এনসিপির সমাবেশ মঞ্চে প্রথম দফা হামলা চালায়। শতাধিক হামলাকারি লাঠিসোঁটা হাতে ভাংচুর চালিয়ে চলে যায়।
পরে এনসিপির নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে জড়ো হলে তাদের ঘিরে ফেলে হামলাকারীরা। পরে, এনসিপি ও পুলিশ এক হয়ে ধাওয়া দিলে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। এ সময় এনসিপি সেখানে সমাবেশ শুরু করে।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে নেতারা পুলিশি নিরাপত্তায় টেকেরহাট হয়ে মাদারীপুর যাওয়ার পথে দুপুর পৌনে ৩টার দিকে শহরের লঞ্চ ঘাট এলাকায় গোপালগঞ্জ সরকারি কলেজের সামনে ফের হামলা চালায়। সমাবেশস্থলের চেয়ারসহ অন্যান্য সরঞ্জাম রাস্তায় এনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। হামলার মুখে ছত্রভঙ্গ হয়ে যান এনসিপি নেতারা।
এরপর পুলিশের সঙ্গে হামলাকারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ; জবাবে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। এতে থমথমে পরিস্থিতি গোটা শহরে।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION